ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম

ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম 2024: কিভাবে সম্ভব?

ইউটিউব এখন শুধু ভিডিও তৈরি করার জায়গা নয়, বরং সঠিক কৌশল জানা থাকলে ভিডিও না বানিয়েও আয় করা সম্ভব। অনেকেই প্রশ্ন করেন, “ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা কি সম্ভব?” হ্যাঁ, সম্ভব। এখানে কয়েকটি উপায় উল্লেখ করা হলো যা অনুসরণ করলে ইউটিউব থেকে ভিডিও না বানিয়ে ইনকাম করা যেতে পারে।

আপনি যদি কোন প্রকার ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে নিচে দেওয়া এই কয়েকটি মাধ্যমে, আপনি ভিডিও না বানিয়েও ইউটিউব থেকে, বা ইউটিউব ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারবেন।

1. ভিডিও এডিটিং সার্ভিস অফার করা

যদি আপনার ভিডিও এডিটিংয়ে দক্ষতা থাকে, তবে আপনি অন্যদের ভিডিও এডিট করে উপার্জন করতে পারেন। এতে নিজের ভিডিও বানানোর প্রয়োজন নেই, শুধু অন্যদের ভিডিও আরও উন্নত করে দিতে হবে।

এখন আমি আপনাদেরকে আমার এক ভিডিও এডিটর বন্ধুর কৌশল শেয়ার করব, যে কৌশল ব্যবহার করে সে ভিডিও এডিটিং করে খুব ভালো পরিমাণে ইনকাম করছে। যারা টুকটাক ভিডিও এডিটিং করতে পারেন, আশা করছি আমার এই আইডিয়াটি শুনে আপনারা সবাই কিছুদিন সময় ব্যয় করে প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হওয়ার চেষ্টা করবেন, কারণ আইডিয়াটি এত ইন্টারেস্টিং হচ্ছে।

আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। এরপরে ইউটিউব থেকে এমন কিছু চ্যানেল খুঁজে বের করতে হবে, যে চ্যানেলগুলোর ভিডিও কোয়ালিটি বা এডিটিং খুবই খারাপ বা মোটামুটি লেভেলের। এই সমস্ত চ্যানেলগুলো আপনি একটা লিস্ট তৈরি করবেন। এরপরে চ্যানেলগুলোর অ্যাবাউট থেকে তাদের ইমেইল এড্রেসটা সংগ্রহ করবেন। যদি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার পান বা ফেসবুক আইডি পান, তাহলে তো খুবই ভালো। এর পরবর্তীতে ওই ইউটিউব চ্যানেলের মালিকদের মেসেজ করবেন।

মেসেজে আপনি বলবেন, “আমি আপনার চ্যানেলটি ঘুরে দেখলাম, আপনার ভিডিওগুলো খুবই সুন্দর এবং ইনফরমেটিভ। তবে, আপনার ভিডিও এডিটিংটা কিছুটা খারাপ হওয়ার কারণে আপনার ভিডিওগুলোতে বেশি ভিউ আসছে না। এর জন্য আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।” এতোটুকু লেখার পরে আপনি একটা ভিডিও অ্যাটাচ করে দিবেন। এখানে কোন ভিডিও দিবেন? আপনি আগের থেকে এডিটিং করে রাখছেন এমন একটি ভিডিও দিবেন, যাতে করে চ্যানেল মালিক বুঝতে পারেন আপনি তাদের সাহায্য করতে সক্ষম।

মোবাইলে ডাটা এন্ট্রি কাজ: শিখুন এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় করুন

2. কিউরেটেড কনটেন্ট শেয়ার করা

অনেক চ্যানেল অন্যদের কনটেন্ট একত্রিত করে, যেমন ট্রেন্ডিং টপিক, জনপ্রিয় মিউজিক ভিডিও, বা খবরের সংকলন। এই পদ্ধতিতে আপনি নিজের ভিডিও না বানিয়ে অন্যদের তৈরি করা কনটেন্ট সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। তবে, কপিরাইট আইন ঠিকমতো মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

3. Creative Commons ভিডিও পুনরায় আপলোড করা

ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও Creative Commons লাইসেন্সের অধীনে প্রকাশিত হয়। এই ধরনের ভিডিওগুলো আপনি পুনরায় আপলোড করতে পারেন এবং কাস্টমাইজ করে, যেমন নতুন টাইটেল বা থাম্বনেইল যোগ করে, আয় করতে পারেন।

4. অডিও-কেন্দ্রিক কনটেন্ট তৈরি

যারা ভিডিও তৈরি করতে চান না, তারা শুধু অডিও কনটেন্ট দিয়েও ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে পারেন। পডকাস্ট, অডিও বুক, বা মিউজিক কম্পাইলেশন খুব জনপ্রিয় হতে পারে। আপনি চাইলে অডিওর সাথে কিছু চমৎকার ভিজ্যুয়াল বা অ্যানিমেশন যোগ করতে পারেন, যাতে দর্শক আকর্ষিত হয়।

5. স্পন্সরড কনটেন্ট ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

ভিডিও না বানিয়ে স্পন্সরশিপ বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকেও আয় করা সম্ভব। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করে, আপনি স্পন্সরড পোস্ট বা লিঙ্ক শেয়ার করতে পারেন। এটি খুবই লাভজনক একটি পদ্ধতি হতে পারে।

ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন নিয়ম ২০২৪

২০২৪ সালে ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন নিয়ম আরও সহজ করা হয়েছে। ইউটিউব শর্টসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কম সময়ের ভিডিও আপলোড করে দ্রুত মনিটাইজ করতে পারেন। শর্টসের ভিউ বেশি পেলে তা থেকে ইনকাম করা যায়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ১০ মিলিয়ন শর্টস ভিউ ৯০ দিনের মধ্যে থাকলে আপনি শর্টস থেকে আয় করতে পারবেন।

ইউটিউব মনিটাইজেশন পলিসি ২০২৪

ইউটিউব মনিটাইজেশন পলিসি ২০২৪ এ কিছু পরিবর্তন এসেছে। ইউটিউবে আয় শুরু করতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে, যেমন:

  • ১০০০ সাবস্ক্রাইবার
  • ৪০০০ ওয়াচ আওয়ার (ভিডিও না বানিয়ে অন্যদের ভিডিও কিউরেট করেও এই সময় পূরণ করা সম্ভব) এছাড়াও, ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে কনটেন্টের মানের উপর আরও গুরুত্ব আরোপ করছে, তাই অরিজিনাল এবং মূল্যবান কনটেন্ট তৈরি করা জরুরি।

কত সাবস্ক্রাইবার হলে টাকা পাওয়া যায়?

ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে হলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকা বাধ্যতামূলক। এই সংখ্যা পূরণ না হলে ইউটিউব আপনাকে তাদের পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দেবে না। তবে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়াতে হলে সঠিক কৌশল ব্যবহার করতে হবে, যেমন সঠিক SEO, আকর্ষণীয় থাম্বনেইল, এবং কনটেন্ট শেয়ারিং।

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়

যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ হয়ে যাবে, তখন গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনার ইনকাম সরাসরি ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তুলতে পারবেন। সাধারণত, $১০০ জমা হলেই আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। টাকা তুলতে গেলে আপনার প্রোফাইল এবং পেমেন্ট সেটিংস সঠিকভাবে সেটআপ করা জরুরি।

ইউটিউবে কত ভিউ হলে কত টাকা পাওয়া যায়?

অনেকেই জানতে চান, “ইউটিউবে কত ভিউ হলে কত টাকা পাওয়া যায়?” এর উত্তর নির্ভর করে ভিউয়ের উৎস এবং ভিডিওর কনটেন্টের উপর। সাধারণভাবে, ইউটিউবে প্রতি ১০০০ ভিউতে $১ থেকে $১০ পর্যন্ত আয় করা যায়, তবে এটি ভিউয়ের স্থান, বিজ্ঞাপনদাতার বাজেট এবং ভিডিওর বিষয়বস্তুর উপর নির্ভরশীল।

ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?

ইউটিউবে আয় করার পরিমাণ একেকজনের জন্য একেক রকম। আপনি যদি নিয়মিত এবং মানসম্মত কনটেন্ট আপলোড করেন, তবে মাসে $১০০ থেকে $১০,০০০ পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এছাড়াও, ব্র্যান্ড ডিল, স্পন্সরশিপ এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় আরও বাড়ানো সম্ভব।

উপসংহার

ইউটিউব থেকে ইনকাম করার অনেক উপায় রয়েছে, এবং ভিডিও না বানিয়ে কিভাবে আয় করা যায় তা জানলে আপনি সহজেই সফল হতে পারেন। শর্টস মনিটাইজেশন নিয়ম, সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা, এবং ইনকাম তোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল দ্রুত বাড়তে পারে। ইনকামের পরিমাণ নির্ভর করে আপনার কৌশল এবং কনটেন্টের উপর, তাই সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে যান।

Leave a Reply

Shopping cart

0
image/svg+xml

No products in the cart.

Continue Shopping